থায়োফিন কি, এর সংকেত, গাঠনিক সংকেত এবং প্রস্তুতি

থায়োফিন কি, সংকেত, গাঠনিক সংকেত এবং প্রস্তুতি

থায়োফিন কি

থায়োফিন এক ধরণের পাঁচ রিং বিশিষ্ট বেনজিন বলয়যুক্ত সালফার ভিত্তিক জৈব যৌগ, যা হেটারো সাইক্লিক অ্যারোমেটিক জৈব যৌগের শর্ত মেনে চলে। এটি একটি বর্ণহীন যৌগ। থায়োফিন সাধারণত মানবদেহ এর জন্য ঔষুধ তৈরিতে ও কৃষিভিত্তিক বিভাগে ব্যবহার হয়ে থাকে। থায়োফিনের পাঁচ রিং এর মধ্যে সালফার যৌগ প্রথম রিং এ অবস্থান করে। নিচে বেনজিন বলয়যুক্ত থায়োফিনের সংকেত দেওয়া হল।

থায়োফিনের সংকেত
থায়োফিনের সংকেত

থায়োফিন এর সংকেত কি

থায়োফিন এর সংকেত হচ্ছে C4H4S । থায়োফিন এর সংকেত দ্বারা বুঝা যায় যে, থায়োফিন যৌগে কার্বন, হাইড্রোজেন ও সালফার যৌগ বিদ্যমান।

থায়োফিন এর গাঠনিক সংকেত

থায়োফিন এর গাঠনিক সংকেত দুই ভাবে লিখা যায়। প্রথমত, থায়োফিনের আনবিক সংকেত (C4H4S) থেকে গাঠনিক সংকেত ও দ্বিতীয়ত বেনজিন বলয় দ্বারা থায়োফিনের গাঠনিক সংকেত। নিচের দুটি চিত্রের মাধ্যমে থায়োফিনের গাঠনিক সংকেত দেওয়া হল।

 
থায়োফিন এর গাঠনিক সংকেত
থায়োফিন এর গাঠনিক সংকেত

থায়োফিন এর গাঠনিক সংকেত (বেনজিন বলয়)
থায়োফিন এর গাঠনিক সংকেত (বেনজিন বলয়)

থায়োফিন কোন ধরনের যৌগ

থায়োফিন একটি হেটারো সাইক্লিক অ্যারোমেটিক জৈব যৌগ। থায়োফিন জৈব যৌগ হাকেলের নীতি মেনে চলে। হাকেলের নীতি বা নিয়ম অনুযায়ী যে সব যৌগে (4n +2) সংখক পাই ইলেকট্রন উপস্থিত থাকে, সেসব যৌগই অ্যারোমেটিক যৌগ। থায়োফিনে বিদ্যমান সর্বমোট পাই ইলেকট্রন, হাকেলের (4n +2) কে সমর্তন করে।  কার্বন ও হাইড্রোজেন এর শতকরা পরিমাণ বেশি থাকায় থায়োফিনকে জৈব যৌগ বলা হয়ে থাকে। থায়োফিনের মতই পাইরোলও একটি অ্যারোমেটিক জৈব যৌগ।

থায়োফিন প্রস্তুতি

থায়োফিন প্রস্তুতিতে কয়েক ধরণের নীতি ও প্রণালী ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য কয়েকটি থায়োফিন তৈরির প্রক্রিয়া নিচে দেওয়া হল।

১। অ্যাসেটিলিন থেকে থায়োফিনঃ ৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় অ্যাসেটিলিনের সাথে হাইড্রোজেন সালফাইড ( ডাই-হাইড্রোজেন সালফার ) একটি পাত্রে রেখে দিলে উপযুক্ত প্রভাবক ছাড়ায় তারা বিক্রিয়া করে থায়োফিন ও হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে। বাণিজ্যিকভাবে থায়োফিন তৈরিতে এই পদ্ধতিটি অনেক বেশি ব্যবহৃত ও জনপ্রিয়। নিচে অ্যাসেটিলিন ও হাইড্রোজেন সালফাইড এর বিক্রিয়া দেখানো হল।

2 C2H2 (অ্যাসেটিলিন) + H2S (হাইড্রোজেন সালফাইড) = C4H4S (থায়োফিন) + H2 (হাইড্রোজেন)

২। বিউটেন থেকে থায়োফিনঃ থায়োফিন তৈরির এই পদ্ধতিতে ৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১ মোল বিউটেন এর সাথে ৪ মোল সালফার বিক্রিয়া করে ১ মোল থায়োফিন ও ৩ মোল হাইড্রোজেন সালফাইড উৎপন্ন করে।

C4H10 (বিউটেন) + 4 S (সালফার) =  C4H4S (থায়োফিন) + 3 H2S (হাইড্রোজেন সালফাইড)

৩। কয়েল-আলকাতরা থেকে থায়োফিনঃ কয়েল-আলকাতরা বা কয়েল-টার হচ্ছে এক ধরণের গাঢ় তেল যা কয়লা ও আলকাতরার মিশ্রণ থেকে তৈরি হয়ে থাকে। রসায়ন বিজ্ঞানে কয়েল-আলকাতরার মিশ্রণ ১,৩ বিউটাডিন নামে পরিচিত। ১৮৮৩ সালে সর্বপ্রথম কয়েল-আলকাতরার মিশ্রন থেকে থায়োফিন যৌগকে আবিষ্কার করা হয়।

C4H6 (১,৩ বিউটাডিন) + S (সালফার) =  C4H4S (থায়োফিন) + H2S (হাইড্রোজেন সালফাইড)

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ