গলগি বস্তু কাকে বলে এবং গলগি বস্তু কি
যে সাইটোপ্লাজমিক অঙ্গাণু দ্বিস্তর বিশিষ্ট ঝিল্লী দ্বারা
আবদ্ধ থেকে নিউক্লিয়াসের কাছাকাছি অবস্থান করে, সেই কোষীয় সাইটোপ্লাজমিক অঙ্গাণুকে
গলগি বস্তু বলে। গলগি বস্তুকে গলগি বডি বা গলগি যন্ত্র অথবা গলগি ক্ষেত্রও বলা হয়ে
থাকে। গলগি বস্তু আকার আকৃতিতে সাধারণত ছোট ঝালিকার মত দেখায়। অনেক কোষে গলগি বস্তু
দেখতে গোলাকার ও লম্বা হয়। প্লাস্টিড যেমন সাইটোপ্লাজমের একটি কোষীয় অঙ্গাণু, ঠিক তেমনি
গলগি বস্তুও সাইটোপ্লাজমের একটি ঝালিকাময় অঙ্গাণু। গলগি বস্তুর নাম বিজ্ঞানী ক্যামিলো
গলগি এর নাম অনুসারে এই অঙ্গাণুটির নামকরণ করা হয়েছে। তিনি ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দে পেঁচা
ও বিড়ালের স্নায়ুকোষ পর্যবেক্ষনকালে এই অঙ্গাণুটি (গলগি বস্তু) আবিষ্কার করেন।
গলগি বস্তুকে কার্বোহাইড্রেট ফ্যাক্টরি বলা হয় কেন
উদ্ভিদ কোষে গলগি বস্তুকে কার্বোহাইড্রেট ফ্যাক্টরি বলার
কারণ হচ্ছে উদ্ভিদ কোষে গলগি বস্তু কার্বোহাইড্রেট জাতীয় পদার্থ গ্লাইকোপ্রোটিন অলিগোস্যাকারাইড
কে পাশাপাশি করে এবং পলিস্যাকারাইড নিঃসরণ করে।
গলগি বস্তুকে কোষের ট্রাফিক পুলিশ বলা হয় কেন
ভেসিকল, যা গলগি বস্তুর কেন্দ্রে অবস্থান করে। এই ভেসিকলকে
গলগি বস্তু ধীরে ধীরে ঠেলে কোষের প্লাজমামেমব্রেন এর দিকে নিয়ে যায়। এই জন্য গলগি বস্তুকে
একটি কোষের ট্রাফিক পুলিশ বলা হয়ে থাকে।
গলগি বস্তুর চিত্র ও গঠন
নিচের চিত্রে প্রথম ভাগে মসৃণ ER (ER হচ্ছে এন্ডোপ্লাজমিক
রেটিকুলাম এর সংক্ষিপ্ত নাম) ও অমসৃণ ER এর অংশ বিশেষ দেখানো হয়েছে। এই মসৃণ ER থেকেই
গলগি বস্তুর উৎপত্তি হয়।
গলগি বস্তুর চিত্র |
গলগি বস্তুতে কয়েকধরনের সিস্টার্নি থাকে যা দেখতে চ্যাপ্টা
থলির মত দেখতে। এই সিস্টার্নি, অনিয়মিত কিছু নালিকা এবং কয়েকটি ভেসিকল মিলে ট্রান্স-গলগি
নেটওয়ার্ক তৈরি করে। পর্যায়ক্রমে কয়েকটি সিস্টার্নি একসাথে মিলিতে হয়ে গলগি বস্তুর
উদ্ভব হয়।
গলগি বস্তুর কাজ
- কোষের লাইসোসোম, প্রোটিন তৈরি করে এবং হেমিসেলুলোজ, মাইক্রোফাইব্রিল যোগান দেয়।
- মাইটোকন্ড্রিয়ার ATP এর ঘাটতি পূরন করা।
- কোষের অভ্যন্তরীণ পানি বের করা।
- কোষবিভাজনের সময় গলগি বস্তু কোষপ্লেট তৈরি করে দেয়।
- অ-প্রোটিন জাতীয় পদার্থ ও পলিস্যাকারাইড সংশ্লেষন করা।
0 মন্তব্যসমূহ