ন্যাপথলিন খেলে কি হয়
ন্যাপথলিনের সাথে আমরা সবাই পরিচিত। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস,
ফাংগাস রোধে, কাপড় গন্ধমুক্ত রাখতে এবং ঘরকে সাপমুক্ত রাখতে ঘরের আনাচে কানাচে ন্যাপথলিন
ব্যবহার করা হয়। এখন কথা হচ্ছে, ন্যাপথলিন খেলে কি হয় ? এবং ভুলবশত ন্যাপথলিন খেয়ে
ফেললে করণীয় বা কি?
অল্প মাত্রায় ন্যাপথলিন খেলে মানবদেহ কিছু অঙ্গ ক্ষতি হয়ে
থাকে। আবার, অতি মাত্রায় ন্যাপথলিন গ্রহনে মানবদেহের চরম পর্যায়ে ক্ষতি ঘটার সম্ভাবনাই বেশি। মানবদেহে ন্যাপথলিনের সর্বনিম্ন মাত্রা ১০ পি পি এম (পি পি এম
হচ্ছে পদার্থ পরিমাপের একক যা একটি পদার্থের প্রতি মিলিয়নে কণার সংখ্যা নির্দেশ করে)
অর্থাৎ ১০ পি পি এম বা তার কম পরিমাণ ন্যাপথলিন সেবন করলে তা সহজেই সহনীয়। কিন্তু,
২৫০ পি পি এম বা তার একটু কম-বেশি মাত্রায় ন্যাপথলিন খেলে তা দেহের জন্য অসহনীয় হয়ে
উঠে। মানবদেহে ন্যাপথলিনের মাত্রার পরিমাণ আমেরিকান গবেষণা সংস্থা NIOSH তাঁদের একটি
রিসার্চ পেপারে প্রকাশ করেছিল। ন্যাপথলিন খায়ার পর মানবদেহের কি কি ক্ষতি হয় তা নিচে
আলোচনা করা হল।
- লোহিত রক্তকণিকার হ্রাস : মানবদেহের রক্তে তিন ধরণের রক্তকণিকা রয়েছে যথা শ্বেত রক্তকণিকা, লোহিত রক্তকণিকা ও অণুচক্রিকা। এই তিন ধরণের রক্তকণিকার মধ্যে লোহিত রক্তকণিকা দেহের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন বহন ও সরবরাহ করে থাকে। সাধারণত, লোহিত রক্তকণিকা মানবদেহের হৃৎপিন্ড ও মস্তিষ্কে বেশির ভাগ অক্সিজেন প্রেরণ করে থাকে। ন্যাপথলিন খাওয়ার একটু পরেই মানবদেহে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাবে। যার ফলে হৃৎপিন্ড ও মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে না এবংমানবদেহ ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যাবে।
- বমি বমি ভাব ও অন্ত্রে ব্যথা : ন্যাপথলিন বাতাসের (অক্সিজেন,হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন ইত্যাদি) সংস্পর্শে গ্যাসের সৃষ্টি করে। ন্যাপথলিন খাওয়ার পর মানবদেহের অন্ত্রে বিষাক্ত গ্যাসের উদ্ভব হয়, যার ফলে বমি বমি ভাব তৈরি হয়। অতি মাত্রায় গ্যাস তৈরি হলে অন্ত্রে ব্যথার সৃষ্টি হয়।
- কিডনির কাজ সাধনে ব্যঘাত : মানবদেহের সব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের মধ্যে কিডনি অন্যতম। পাকস্থলির অন্ত্র ও মূত্রথলির মধ্যে সংযোগ সৃষ্টিকারী হচ্ছে কিডনি। ন্যাপথলিন গ্রহণের পর পরই কিডনির ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে যায়। কিডনির ক্ষতি হলে মানবদেহে হেমাটোসিস প্রক্রিয়ার বিঘ্ন ঘটে এবং সাথে সাথে এসিড ক্ষার ভারসাম্যতা বজায় থাকে না।
ন্যাপথলিন ভুলবশত খাওয়ার পর করণীয় কি ?
কেউ যদি ন্যাপথলিন ভুলবশত খেয়ে ফেলে, তাহলে সবার আগে সে চেষ্টা করবে বমি করার জন্য। বমি করার সাথে সাথে যদি ন্যাপথলিন বা পাকস্থলির সব খাবার চলে আসে, তবে সেক্ষেত্রে বড় কোনো বিপদের সম্ভাবনা থাকবে না। আর যদি বমি করতে না পারে, তাহলে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
0 মন্তব্যসমূহ