গণতন্ত্র কাকে বলে এবং গণতন্ত্র কি
যে শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা
জনগণের হাতে ন্যস্ত থাকে এবং জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শাসনকার্য পরিচালনা
করে তাকে গণতন্ত্র বলে। (Abraham Lincoln) আব্রাহাম লিংকনের মতে, “গণতন্ত্র হলো জনগণের
কল্যাণের জন্য জনগণের দ্বারা পরিচালিত জনপ্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থা।“
গণতন্ত্র (Democracy) বলতে
জনগণের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অংশগ্রহণের মাধ্যমে গড়ে ওঠা শাসনব্যবস্থাকে বোঝায় । প্রতিনিধিত্বমূলক
সরকার, সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন, জনমতের
প্রাধান্য, বহুদলীয় ব্যবস্থা, আইনের শাসন, স্বাধীন প্রচারমাধ্যম, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ইত্যাদি গণতান্ত্রিক
সরকার ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য। উদ্দীপকেও
গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থার উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য
প্রকাশ করেছে।
গণতন্ত্রকে সফল
করতে হলে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। যেমন- গণতন্ত্রের সাফল্যের অন্যতম শর্ত হলো
গণতন্ত্রকামী জনগণ। গণতন্ত্রমনা জনগণ
কেবল গণতন্ত্রকে কামনাই করবে না বরং তা ধরে রাখার জন্য সচেষ্ট থাকবে। দীর্ঘকাল গণতন্ত্রের চর্চা হলে গণতান্ত্রিক
মূল্যবোধ কেবল রাষ্ট্র ব্যবস্থাকেই নয়, সমাজ ব্যবস্থাকেও
গণতান্ত্রিক করে তোলে। আবার গণতন্ত্র
রক্ষার জন্য জনগণকে হতে হবে সদাজাগ্রত,
প্রজ্ঞাবান, বুদ্ধিদীপ্ত, নৈতিকবোধ, ন্যায়পরায়ণতা সম্পন্ন।
এসব গুণ শিক্ষার
মাধ্যমেই অর্জিত হয়। গণতন্ত্র সফল হওয়ার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো শক্তিশালী ও সুযোগ্য
নেতৃত্ব। গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ
সুদক্ষ নেতৃত্বই গণতন্ত্রের শক্তিশালী ভিত্তি দান ও গতিশীলতা আনয়নে সহায়ক। আবার লিখিত সংবিধান গণতন্ত্রকে
সুরক্ষিত করার সহায়ক। সংবিধান লিখিত হলে শাসকশ্রেণী
স্বেচ্ছাচারী হতে পারে না। আবার গণতন্ত্রের
সাফল্যের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো আইনের শাসনের
উপস্থিতি। আইনের শাসন নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতার রক্ষক এবং শাসকের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার উপায়।
এসব শর্তাবলি ছাড়াও সুসংহত রাজনৈতিক
দল ব্যবস্থা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, ক্ষমতার
বিকেন্দ্রীকরণ, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা, সহনশীলতা ইত্যাদি গণতন্ত্রের সফলতার শর্তাবলি হিসেবে বিবেচিত।
0 মন্তব্যসমূহ