একতরফা দাখিলা পদ্ধতির সুবিধা
একতরফা দাখিলা পদ্ধতির হিসাব
সংরক্ষণ করলে নিচের সুবিধাগুলো লাভ
করা যায়।
১. সহজ পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে মালিক তার ইচ্ছেমতো হিসাব রাখতে পারে বলে অন্যান্য পদ্ধতি হতে আপেক্ষাকৃত
সহজে হিসাব রাখা যায়।
২. অল্পসংখ্যক হিসাব : এ পদ্ধতি সম্পত্তিসংক্রান্ত এবং নামিক হিসাব রাখতে হয় না বলে অল্প সংখ্যক হিসাব রাখলেই চলে।
৩. সীমিত ব্যয় : এ পদ্ধতি হিসাবশাস্ত্রের কোনো নিয়মনীতি মেনে চলে না বলে স্বজ্ঞান হলেও কোনো সমস্যা হয় না।
৪. গোপনীয়তা রক্ষা : এ পদ্ধতিতে
হিসাব রক্ষণের মাধ্যমে কারবারের বিভিন্ন হিসাবের
গোপনীয়তা রক্ষা সম্ভব।
৫. হিসাবরক্ষক : এ পদ্ধতিতে হিসাবরক্ষণের
জন্য খুব দক্ষ হিসাবরক্ষকের প্রয়োজন
হয় না।
৬. জনপ্রিয় : এ পদ্ধতি সহজ সরল,
ব্যয় কম, ও ইচ্ছামাফিক হিসাব রাখা
যায় বলে অধিক জনপ্রিয়।
উপরিউক্ত সুবিধাভোগ করে বলে ছোট ছোট কারবারি প্রতিষ্ঠানসমূহ একতরফা দাখিলা পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে।
একতরফা দাখিলা পদ্ধতির অসুবিধা
একতরফা পদ্ধতি হিসাববিজ্ঞানের
নিয়মনীতি মেনে চলে না বলে এটি বিশৃঙ্খল
পদ্ধতি নামে খ্যাতি লাভ করেছে। নিচে এর অসুবিধা
বা সীমাবদ্ধতা আলোচিত হলো।
১. রেওয়ামিল প্রস্তুত করা যায়
না : এ পদ্ধতিতে দ্বৈতস্বত্তা মেনে চলে না বলে রেওয়ামিল প্রস্তুত করা যায় না।
২. অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে
লেনদেনের দুটি পক্ষ লিপিবন্ধ হয় না বলে
একে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলে।
৩. নির্ভরযোগ্য তথ্যের অভাব
: এ পদ্ধতিতে হিসাবশাস্ত্রের নিয়মনীতি মেনে চলে না বলে এর কোনো তথ্যের উপর নির্ভর করা যায় না।
৪. গাণিতিক শুদ্ধতা : বিশৃঙ্খল ও অসম্পূর্ণ হিসাব পদ্ধতি বলে গাণিতিক শুদ্ধতা নির্ণয় সম্ভব নয়।
৫. আয়ব্যয় : সঠিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে না বলে এর
থেকে প্রকৃত আয়-ব্যায় নির্ণয় করা যায় না।
৬. চুরি ও জালিয়াতি : এ পদ্ধতিতে
অনেক লেনদেন লিপিবন্ধই করা হয় না।
আবার কিছু আংশিক লিপিবদ্ধ হয় বলে চুরি জালিয়াতির
সুযোগ বেশি থাকে।
৭. প্রকৃত লাভক্ষতি : এ পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয়, লাভ-ক্ষতি ও উদ্বৃত্তপত্র করা যায় না বলে প্রকৃত লাভ-ক্ষতি প্রস্তুত করা যায় না, ফলে কারবারের সঠিক আর্থিক অবস্থা জানা যায় না।
৮. সম্পত্তি ও সুনাম : মূল্যায়ন সম্পত্তির সঠিক হিসাব
রাখা হয় না বলে কারবার বিক্রয়কালে সুনামের
মূল্যায়ন করা কঠিন হয়।
৯. তুলনামূলক বিচারবিশ্লেষণ : এ পদ্ধতিতে বিস্তারিত হিসাব রাখা হয় না বলে বিগত বছরের
সাথে তুলনামূলক বিচার বিশ্লেষণ করা যায়
না।
১০. ব্যয় নিয়ন্ত্রণ
: নামিক হিসাব রাখা হয় না বলে ব্যয় সম্পর্কে জানা যায় না ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণ
কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
১১. ব্যবহার
: আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয় বলে এর ব্যবহার খুবই সীমিত ও ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানে
এর ব্যবহার লক্ষ করা যায়।
১২. বিশ্বাসযোগ্যতা
: আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়, বিশৃঙ্খল ও অসম্পূর্ণ হিসাব পদ্ধতি বলে এর বিশ্বাস যোগ্যতা
তেমন একটা নেই।
১৩. আন্তর্জাতিক
স্বীকৃতি : এ পদ্ধতি IAS কর্তৃক স্বীকৃত নয় বলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়।
১৪. অন্তর্বর্তীকালীন
হিসাব : এ পদ্ধতিতে নামিক হিসাব রাখা হয় না বলে যেকোনো সময় অন্তবর্তীকালীন
হিসাব প্রস্তুত সম্ভব নয়।
১৫. ভুল বুঝাবুঝি
: এ পদ্ধতির একটি হ-য-ব-র-ল পদ্ধতি বলে ঝগড়া-বিবাদ ও ভুল বুঝাবুঝি লেগেই
থাকে।
১৬. কারবারের
সঠিক চিত্র : এ পদ্ধতিতে হিসাব রাখলে আর্থিক বিবরণী হতে কারবারের সঠিক চিত্র
পাওয়া যায় না।
উপরিউক্ত অসুবিধা
বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও এখনো এ পদ্ধতিটি ছোট ছোট কারবারি প্রতিষ্ঠানে আজও
ব্যবহৃত হচ্ছে।
0 মন্তব্যসমূহ