নগদান বই ও ব্যাংক বিবরণীর উদ্বৃত্তের গরমিলের কারণ
নগদান বই ও ব্যাংক বিবরণীর ( পাস বইয়ের ) উদ্বৃত্তের বা জেরের বা ব্যাল্যান্সের মধ্যে যে পার্থক্য দেখা দেয় তার কারণ নিয়ে আলোচনা করা
হলো।
১. ইসুকৃত চেক অনুপস্থাপিত : আমানতকারী তার পাওনাদারদের যেসব চেক ইসু করে তা সাথে সাথে
নগদান বইতে ক্রেডিট করলে ও পাওনাদার যতক্ষণ
পর্যন্ত চেকটি ব্যাংকে উপস্থাপন না করে ততক্ষণ
পর্যন্ত ব্যাংক আমানতকারীর পাস বইতে ডেবিট করে
না বলে দুই উদ্বৃত্তের গরমিল দেখা দেয়।
২. আমানতকারীর পক্ষে ব্যাংক কর্তৃক
শোধ : অনেক সময় ব্যাংক আমানতাকারীর স্থায়ী
নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন খরচাদি শোধ করে এবং
সাথে সাথে পাস বইতে ডেবিট করে। কিন্তু আমানতকারী
ব্যাংক বিবরণী না পাওয়া পর্যন্ত খরচ হিসাবে নগদান
বইতে ক্রেডিট করে না তাই গরমিল হয়।
৩. ব্যাংক কর্তৃক সরাসরি আদায়
: অনেক ক্ষেত্রে আমানতকারীর স্থায়ী নির্দেশে
আমানতাকারীর পক্ষে ব্যাংক সরাসরি সুদ লভ্যাংশ
আদায় করে পাস বইতে লিপিবদ্ধ করে কিন্তু আমানতকারী
ব্যাংক বিবরণী না পাওয়া পর্যন্ত খরচ হিসাবে নগদান
বইতে ক্রেডিট করে না তাই গরমিল হয়।
৪. জমাকৃত কিন্তু অনাদায়ী চেক
: আমানতকারী সংগৃহীত চেক ব্যাংকে জমা দেয়ার
সাথে সাথে নগদান বইতে ডেবিট করে কিন্তু ব্যাংক
যতক্ষণ পর্যন্ত টাকা আদায় করতে না পারে ততক্ষণ পর্যন্ত উহা পাস বইতে ক্রেডিট করে না বলে পার্থক্য দেখা দেয়।
৫. চেক বা প্রাপ্যবিল অমর্যাদাকৃত
: অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যুকৃত চেক বা প্রাপ্যবিল আদায়কালে ব্যাংক
কর্তৃক অমর্যাদাকৃত হলে পাস বই ও নগদান বই
এর উদ্বৃত্তের পার্থক্য দেখা দেয়।
৬. ব্যাংকে সরাসরি জমা : মাঝে
মাঝে দেনাদারগণ আমানতকারীর ব্যাংক হিসাবে
লভ্যাংশ, সুদ, নগদ টাকা সরাসরি জমা দিয়ে থাকে।
এরূপ লেনদেন পাস বইতে লিপিবদ্ধ করা হলেও নগদান বইতে সাথে সাথে লিপিবদ্ধ করা হয় না বলে পার্থক্য দেখা দেয়।
৭. আমানতকারীর ভুল : অনেক সময়
আমানতকারীর ভুলের কারণেও গরমিল হয়ে
থাকে। যেমন আমানতকারী পাস বই বা নগদান বইতে
লিখতে ভুল করলে।
৮. ব্যাংক চার্জ ও উত্তোলনের
সুদ : আমানতাকারীর হিসাবের উপর যদি ব্যাংক কোনো
খরচ ধার্য করে বা জমাতিরিক্তের সুদ ধার্য করে
তা সরাসরি পাস বইতে লিপিবদ্ধ করা হলেও সাথে সাথে
নগদান বইতে লিপিবন্ধ হয় না বলে গলমিল দেখা দেয়।
৯. ব্যাংক জমার সুদ : আমানতকারীর
জমা টাকার উপর কোনো লভ্যাংশ বা সুদ
মঞ্জুর করলে তা সরাসরি ব্যাংকের বইতে যোগ করা
হলেও নগদান বইতে তাৎক্ষণিক লিপিবদ্ধ করা হয় না বলে গরমিল দেখা দেয়।
১০. একাধিক হিসাব : একই ব্যাংকের
একই শাখার যদি আমানতকারীর একাধিক হিসাব
থাকে তবে একটির লেনদেন অন্যটিতে লিপিবদ্ধ করলে
গরমিল দেখা দেয়।
১১. হিসাবরক্ষণের ভুল : হিসাবরক্ষণের
ভুলের কারণে যদি কোনো হিসাব নগদান বহিতে লিপিবদ্ধ
না করা হয় বা আংশিক লিপিবদ্ধ করা হয় বা কমবেশি
লিপিবদ্ধ করা হয় তবে গরমিলের সৃষ্টি হয়।
0 মন্তব্যসমূহ