পৃথিবীর জল ও স্থলভাগের বিন্যাস
পৃথিবীর মোট
আয়তনের ৭১.৪ ভাগ জল এবং বাকি ২৮.৬ ভাগ স্থল। অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠের ৭ ভাগের ৫ ভাগ জলভাগ
এবং ২ ভাগ স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত। ভূপৃষ্ঠের উঁচু ও নিচু না হয়ে যদি সমতল
অবস্থান করতো, তাহলে ভূপৃষ্ঠের সর্বত্র প্রায় ৩.২
কি. মি. গভীর জলে আবৃত থাকত। ভূপৃষ্ঠের মোট আয়তনের ভাগ স্থলমণ্ডল আবার কয়েকটি খণ্ডে বিভক্ত হয়ে চারদিকে সুশৃঙ্খলভাবে
অবস্থান করছে, এরূপ এক একটি ভাগকে মহাদেশ বলে।
পৃথিবীপৃষ্ঠে মোট ৭টি মহাদেশে রয়েছে। যথা : এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা,
দক্ষিণ আমেরিকা, ওসেনিয়া, এন্টার্কটিকা। এছাড়াও
সমুদ্রবক্ষে অসংখ্য ছোট-বড় দ্বীপ মহাদেশগুলোকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে আছে। মহাদেশগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ এশিয়া এবং সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র
ওসেনিয়া। এন্টার্কটিকা বা কুমেরু মহাদেশ এখনও সম্পূর্ণরূপে আবিষ্কৃত হয়নি।
ভূবিজ্ঞানীদের
মতে, অতীতে কোনো একসময় স্থলভাগগুলো একত্রে সংযুক্ত ছিল। পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক
কারণে ভূখণ্ডের মধ্যে ফাটলের সৃষ্টি হয় এবং ক্রমান্বয়ে আয়তন বৃদ্ধি পেয়ে প্রসারিত
হতে থাকে। ফলে তা খণ্ড খণ্ড অংশে বিভক্ত। হয়ে
চারদিকে ছড়িয়ে অবস্থান করে। মহাদেশগুলোকে আবৃত করে ফাটলগুলো স্বাভাবিকভাবেই বারিমণ্ডল
বা জলভাগ গঠিত হয়। আয়তন, গভীরতার ওপর ভিত্তি
করে বারিমণ্ডল বা জলভাগ চারটি প্রধান ভাগে বিভক্ত। যথা: মহাসাগর, সাগর, হ্রদ, ও নদী। অবস্থান, আয়তন ও গভীরতা অনুযায়ী, বারিমণ্ডলের
বৃহত্তম ও গভীরতম অংশকে মহাসাগর বলে। অপেক্ষাকৃত
ক্ষুদ্রায়তনের পানি রাশিকে সাগর এবং তিনদিকে স্থলবেষ্টিত অর্থাৎ একদিক উন্মুক্ত পানি
রাশিকে উপসাগর বলে । পৃথিবীপৃষ্ঠে মোট ৫টি মহাসাগর
আছে। যথা: ১. প্রশান্ত মহাসাগর, ২. আটলান্টিক মহাসাগর, ৩. ভারত মহাসাগর, ৪. সুমেরু
বা উত্তর মহাসাগর এবং ৫. কুমেরু বা দক্ষিণ মহাসাগর।
0 মন্তব্যসমূহ