অনুপাত বিশ্লেষণের উদ্দেশ্য নিম্নোক্ত
একটি ব্যবসায়
প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলির সফলতা ব্যর্থতার সাথে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ও বাইরের অনেক পক্ষের
স্বার্থ জড়িত থাকে। যেমন- প্রতিষ্ঠানের মালিক, ব্যবস্থাপনা
কর্তৃপক্ষ, কর্মচারী, পাওনাদার, দেনানার সরকার, নিরীক্ষক,
গবেষক প্রভৃতি ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ব্যবসার প্রকৃত অবস্থা
জানতে আগ্রহী থাকে। এজন্য আর্থিক বিবরণীসমূহ
তথ্য ক্রয়-বিক্রয় হিসাব, লাভ-ক্ষতি বণ্টন
হিসাব, তহবিদ প্রবাহ বিবরণী, উদ্বৃত্তপত্র, বিভিন্ন
স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষের চাহিদার আলোকে এ অনুপাত বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হয়। আর্থিক বিবরণী বা অনুপাত বিশ্লেষণের মুখ্য উদ্দেশ্যাবলি নিয়ে বর্ণনা করা হলো।
১. তারল্য যাচাই
: তারল্য বলতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ পরিশোধের ক্ষমতাকে বুঝায়। অনুপাত বিশ্লেষণের অন্যতম
উদ্দেশ্য হলো ব্যবসায় স্বল্পমেয়াদি ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা
আছে কিনা তা যাচাই কর।
২. কর্মদক্ষতা
যাচাই : কর্মদক্ষতা সম্পন্ন ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পৃক্ত। ভিন্ন সম্পদের সাথে বিক্রয়ের
সম্পর্ক নির্ধারণ করে কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মতৎপরতা
যাচাই করা যায়। অনুপাত বিশ্লেষণের অন্যতম মুখ্য
উদ্দেশ্য হলো প্রতিষ্ঠানের কর্মদক্ষতা যাচাই করা।
৩. মুনাফার্জন
কাঠামো যাচাই : মুনাফা ব্যবসার মূল লক্ষ্য। কোনো প্রতিষ্ঠান টিকে থাকার মাধ্যম হলো
মুনাফার্জন। অনুপাত বিশ্লেষণের মাধ্যমে মুনাফার্জন ক্ষমতা নিরূপণ করা যায়। সুতরাং
মুনাফার্জন ক্ষমতা যাচই এর অন্যতম মুখ্য উদ্দেশ্য।
৪. মূলধন কাঠামো
যাচাই : মূলধন কাঠামো বলতে ইক্যুইটি, ঋণ বা এতদোভয়ের সংমিশ্রণকে বুঝায়। ঋণের সাথে ঝুঁকি
জড়িত, অধিক লাভের ক্ষেত্রে ঝুঁকি গ্রহণ হারাপ নয়।
শুধুমাত্র ইক্যুইটি আবার রক্ষণশীলতার পরিচায়ক।
মূলধন কাঠামো এজন্য একটি কাম্য সংমিশ্রণে হওয়া
উচিত। অনুপাত বিশ্লেষণের মাধ্যমে এর কাম্যতার
মাত্রা জানা যায়। তাই অনুপাত বিশ্লেষণের অন্যতম মুখ্য উদ্দেশ্য হলো প্রতিষ্ঠানের কাঠামো যাচাই।
৫. দীর্ঘমেয়াদি
আর্থিক স্বচ্ছলতা বিশ্লেষণ : কিছু অনুপাত বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদি
আর্থিক স্বচ্ছলতা কেমন তা জানা যায়। তাই অনুপাত্ত
বিশ্লেষণের মৌলিক উদ্দেশ্যের অন্যতম হলো প্রতিষ্ঠানের
দীর্ঘমেয়াদি অর্থিক স্বচ্ছলতা বিশ্লেষণ।
৬. প্রতিযোগিতায়
টিকে থাকার ক্ষমতা যাচাই : ব্যবসা একটি প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র। শিল্প গড় বা আদর্শ মানের সাথে
প্রতিষ্ঠানের অর্জিত ফলাফলের কয়েকটি অনুপাত বিশ্লেষণ
করলে প্রতিষ্ঠান টিকে থাকার ক্ষমতা জানা যায়।
সুতরাং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার ক্ষমতা যাচাই
করাও অনুপাত বিশ্লেষণের উদ্দেশ্য।
৭. সম্পদের কাম্য
ব্যবহার বিশ্লেষণ : সম্পদ যত ভালো ব্যবহার হবে প্রতিষ্ঠানের লাভও তত বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা
থাকবে। অলস সম্পদ কখনো লাভার্জনে সহায়ক নয়। কিছু
অনুপাত বিশ্লেষণের মাধ্যমে সম্পদ
কাম্য মানে ব্যবহার হচ্ছে কিনা তা জানা যায়। তাই সম্পদের কাম্য ব্যবহার অনুপাত
বিশ্লেষণের অন্যতম মৌলিক উদ্দেশ্য।
৮. প্রতিষ্ঠানের
সার্বিক অবস্থা মূল্যায়ন : মালিক, বিনিয়োগকারী, কর্মকর্তা
ও কর্মচারী, ঋণদাতা প্রভৃতি পক্ষ প্রতিষ্ঠানের
সার্বিক অবস্থা জানতে চায়। অনুপাত বিশ্লেষণে প্রতিষ্ঠানের সার্বিক মূল্যায়ন করা যায়। অতএব, অনুপাত বিশ্লেষণের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো প্রতিষ্ঠানের অবস্থা মূল্যায়ন
করা।
0 মন্তব্যসমূহ