ফজর নামাজের গুরুত্ব নিয়ে হাদিস
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন,
মহানবী (সঃ) ইরশাদ করেছেন, মুনাফেকদের পক্ষে
ফজর ও ইশা অপেক্ষা কোন কঠিন নামাজ নেই। যদি
তারা জানত তার মধ্যে কি আছে তাহলে তারা তা আদায়
করার জন্য আসত, যদিও তাদের আসতে হত হামাগুড়ি দিয়ে। (বুখারী ও মুসলিম)
হযরত উমারাহ
ইবনে রুআইবাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, আমি মহানবী (সঃ)-কে বলতে শুনেছি, এমন
কোন ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে না, যে সূর্যোদয়ের
পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে নামাজ আদায় করেছে। অর্থাৎ ফজর (Fazr Prayer) ও আসর। (মুসলিম)
ফজর নামাজের সময়
রাতের শেষে পূর্বাকাশে উপরে-নীচে একটি লম্বা সাদা রেখা প্রকাশ পায়। এ রেখা দেখা যাওয়ার সময়কে সুবহে কাযেব বলে। সাদা রেখা বিলীন হয়ে পুনরায় অন্ধকার প্রকাশ পায়। এর অল্পক্ষণ পর আকাশে উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃতি সাদা রং দেখা দেয়। এ সাদা রং প্রকাশের সময় থেকে সুবহে ছাদেক শুরু হয়। সুবহে ছাদেক হলে বুঝতে হবে ফজরের ওয়াক্ত হয়েছে এবং সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত ফজরের ওয়াক্ত থাকবে। পূর্বাকাশে সূর্যের সামান্য কিনারা দেখা দিলে ফজরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়।
ফজরের নামাজ বিলম্ব করে আদায় করা মুস্তাহাব
হযরত রাফি ইবনে খাদীজ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, হযরত নবী করীম (সঃ) ইরশাদ করেছেন, তোমরা ফজরের নামাজ শুভ্র ফর্সা প্রভাতে আদায় করো। কেননা, এতে সওয়াব বেশী রয়েছে। (তিরমিযী শরীফ)
ফজরের নামাজ একটু বিলম্বে আদায় করলে মুসল্লীর সমাগম বেশী হবে। তবে বর্তমান যুগেও যদি মানুষ ফজরের নামাজ জামাআতের সাথে আদায় করার জন্য প্রথম ওয়াক্তেই প্রস্তুত হয়ে থাকে এবং জামাআত বিলম্বে করলে অসুবিধা হয় তাহলে প্রথম ওয়াক্তে নামাজ আদায় করে নেয়াই উত্তম। যেমনঃ রমযান মাসে সকলেই সেহরী খেয়ে নামাজের অপেক্ষায় থাকে এবং এ সময় বিলম্ব করলে হয়তো কেউ ঘুমিয়ে যাবে এবং মুসল্লির সংখ্যা কমে যাবে। তাই এ অবস্থায় ফজরের নামাজ প্রথম ওয়াক্তে আদায় করাই উত্তম।
আরো পড়ুনঃ ফজরের নামাজ এর পূর্নাংগ গাইড।
ফজরের নামাজে গাফিলতিকারী নিয়ে হাদিস
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে।
তিনি বলেন, মহানবী (সঃ)-এর নিকট এক ব্যক্তির
ব্যাপারে বলা হল, সে সারা রাত্রি নিদ্রায় যায়।
এমনকি সকাল হল, কিন্তু নামাজের জন্য জাগ্রত হল না। ইহা শ্রবণ করে মহানবী (সঃ) বললেন, সে এমন ব্যক্তি যার কানে অথবা
তিনি বলেছেন, যার দুই কানে শয়তান প্রস্রাব
করে দিয়েছে। (বুখারী ও মুসলিম)
নামাজের জন্য
ঘুম হতে জাগানোর ফযীলত হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, মহানবী
(সঃ) ইরশাদ করেছেন, মহান আল্লাহ সেই ব্যক্তির প্রতি
অনুগ্রহ করেন যে ব্যক্তি রাতে উঠে নামাজ আদায়
করে এবং আপন স্ত্রীকেও জাগায়ে দেয় এবং সেও
নামাজ আদায় করে। আর যদি সে ঘুম হতে উঠতে অস্বীকার করে, তাহলে তার মুখমন্ডলে পানি ছিটিয়ে দেয়। এভাবে আল্লাহ অনুগ্রহ
করেন সে স্ত্রীর প্রতিও যে রাতে উঠে নামাজ আদায়
করে এবং আপন স্বামীকেও জাগিয়ে দেয় এবং সেও
নামাজ আদায় করে। আর যদি সে উঠতে অস্বীকার করে তাহলে তার মুখমন্ডলে পানি ছিটিয়ে দেয়। (আবু দাউদ ও নাসায়ী)
ফজরের নামাজ
জামাআতের সাথে আদায় করার ফযীলত নিয়ে হাদিস
হযরত উসমান ইবনে আফ্ফান (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, হযরত রাসূলে করীম (সঃ) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাআতের সাথে আদায় করল সে যেন সম্পূর্ণ রাত নামাজ আদায় করল। (মুসলিম)
0 মন্তব্যসমূহ