এ পৃথিবী সৃষ্টির শুরুতে ছিল উত্তপ্ত বাষ্পপিণ্ড। কালক্রমে তা তাপ বিকিরণ করে সংকুচিত ও তরল হওয়ার প্রান্তলগ্নে আপেক্ষিক গুরুত্ব অনুযায়ী হালকা জাতীয় পদার্থগুলো ওপরে ভেসে ওঠে। কিন্তু অপেক্ষাকৃত কঠিন ও ভারী পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত স্তরটি সর্বনিম্নে অবস্থান করে। পৃথিবীর অতি গভীরে কেন্দ্রমণ্ডল নামে একটি স্তরের সৃষ্টি করে।
কেন্দ্রমণ্ডল কাকে বলে
পৃথিবীর ভূঅভ্যন্তরের কেন্দ্রে অত্যন্ত কঠিন ও ভারী পদার্থের সমন্বয়ে যে গোলকটি অবস্থিত তাকে কেন্দ্ৰমণ্ডল বলে। ভূতত্ত্ববিদগণের মতে, কেন্দ্রমণ্ডল লৌহ, পারদ, নিকেল, সিসা প্রভৃতি কঠিন ও ভারী মৌলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত। এগুলোর মধ্যে নিকেল (Ni) ও লৌহের (Fe) পরিমাণ অধিক বলে বিজ্ঞানী সুয়েস এ স্তরকে 'নাইফ' (Ni + Fe) স্তর এবং প্রফেসর এনথার হোস এই স্তরকে 'অন্তস্তল' স্তর বলে অভিহিত করেন।
কেন্দ্রমণ্ডলের বৈশিষ্ট্যসমূহ
কেন্দ্রমণ্ডলের বৈশিষ্ট্যসমূহ
নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
১. কেন্দ্রমণ্ডলটি ভূঅভ্যন্তরের কেন্দ্রে অবস্থিত।
২. এ স্তরের গভীরতা প্রায় ৪,৪৮৬ কি. মি.।
৩. এ স্তরটি অত্যন্ত কঠিন ও ভারী পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত।
৪. কেন্দ্রমণ্ডলের চাপ ভূপৃষ্ঠের বায়ুমণ্ডলের চাপের
চেয়ে অনেক গুণ (প্রায় ৩০ - ৪০) বেশি।
৫. এ স্তরের তাপমাত্রা ৩,০০০° - ৫,০০০° সেলসিয়াস।
৬. এ.মণ্ডলটি সমগ্র ভূভাগের শতকরা ১৬ ভাগেরও বেশি স্থান
জুড়ে অবস্থিত।
৭. এর আপেক্ষিক গুরুত্ব প্রায় ১৩.৬।
পরিশেষে বলা যায় যে, ভূঅভ্যন্তরের
স্তরগুলোর মধ্যে কেন্দ্রমণ্ডল অধিক গভীরতাসম্পন্ন সর্বশেষ স্তর। এ স্তরটি অত্যধিক তাপ ও কঠিন পদার্থের
সংমিশণে গঠিত। অধিক গভীরতাসম্পন্ন এ স্তর সম্পর্কে আরও নতুন নতুন তথ্য
উদঘাটনে বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ