ভোক্তার উদ্বৃত্ত কি

 

ভোক্তার উদ্বৃত্ত কি

ভোক্তার উদ্বৃত্ত

উদ্বৃত্ত শব্দের অর্থ হল অতিরিক্ত বা বেশি। অর্থনীতিতে উদ্বৃত্ত কথাটি ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে প্রত্যাশার তুলনায় যতটুকু বেশি তাকে উদ্বৃত্ত বলে। সাধারণভাবে ভোক্তা কোন দ্রব্য হতে এর মূল্যের অতিরিক্ত যে তৃপ্তি পায় তাই ভোক্তার উদ্বৃত্ত। অধ্যাপক আলফ্রেড মার্শাল ভোগকারীর উদ্বৃত্ত ধারণাটি ব্যাখ্যা করেন। অধ্যাপক মার্শাল বলেছেন, “যখন কোন ব্যক্তি বেশি দাম দিতে ইচ্ছুক থাকা সত্ত্বেও অপেক্ষাকৃত স্বল্প দামে দ্রব্য ক্রয় করতে সমর্থ, তখন সে যে সুবিধা ভোগ করে তাকে ভোক্তার উদ্বৃত্ত বলা যেতে পারে।" অর্থাৎ, একটি দ্রব্যের জন্য ভোক্তা যে দাম দিতে ইচ্ছুক তাকে ব্যক্তিগত চাহিদা দাম এবং প্রকৃতপক্ষে, সে যে দাম দিয়ে তা ক্রয় করে তাকে বাজার দাম বলে। ব্যক্তিগত চাহিদা দাম ও বাজার দামের মধ্যে ইতিবাচক ব্যবধানই হল ভোক্তার উদ্বৃত্ত। বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ ভোক্তার উদ্বৃত্তের বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাদের এ সংজ্ঞাগুলো প্রদত্ত হল।

ভোক্তার উদ্বৃত্ত কাকে বলে

অধ্যাপক স্যামুয়েলসনের মতে, "সামগ্রিক কল্যাণ এবং সামগ্রিক আর্থিক মূল্য এ দুইয়ের মধ্যে সর্বদাই ব্যবধান থাকে। ভোক্তা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে যে পরিমাণ তৃপ্তি পায়, সেই তৃপ্তির পরিমাণ থেকে ব্যয়ের পরিমাণ বাদ দিলে যে উদ্বৃত্ত থাকে তাই ভোক্তার উদ্বৃত্ত।

অধ্যাপক টাইজিগ এর মতে, “কেউ মোট যে দাম দিতে রাজি হতো এবং মোট যে দাম দেয় তার পার্থক্যই হল ভোক্তার উদ্বৃত্ত।

অধ্যাপক মেহেতা বলেছেন, “কোন ব্যক্তি ক্রীত দ্রব্য থেকে যে পরিমাণ তৃপ্তি লাভ করে তা থেকে ঐ দ্রব্য লাভের জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয়জনিত তৃপ্তি ত্যাগ করতে হয় এটি বাদ দিলে যে পরিমাণ তৃপ্তি বেশি হয় তাই ভোক্তার উদ্বৃত্ত।"

উপরিউক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে বলা যায়, কোন দ্রব্যের মোট তৃপ্তি থেকে এর মোট মূল্য বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে তাই ভোক্তার উদ্বৃত্ত। এক্ষেত্রে দ্রব্যের প্রান্তিক উপযোগ তার দামের সমান হয় বলে চাহিদা দামগুলোর সমষ্টি প্রান্তিক উপযোগগুলোর সমষ্টি বা মোট উপযোগ প্রকাশ করে।

আর বাজার দাম × ক্রীত দ্রব্যের সংখ্যা = মোট ব্যয় প্রকাশ পায়। তাই ভোক্তার উদ্বৃত্ত ধারণাটিকে নিম্নোক্তভাবে প্রকাশ করা যায়।

ভোক্তার উদ্বৃত্ত = মোট উপযোগ – মোট ব্যয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ