জীবনধারণ করতে গিয়ে ভোক্তাকে বিভিন্ন ধরনের দ্রব্য
ক্রয়/ভোগ করতে হয়। দ্রব্যগুলোকে স্বাভাবিক দ্রব্য, উৎকৃষ্ট দ্রব্য, নিকৃষ্ট দ্রব্য বা গিফেন
দ্রব্য, প্রয়োজনীয় দ্রব্য এরূপ বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। আয় প্রভাব
বলতে এসব দ্রব্যের ভোগের উপর আয় পরিবর্তনের প্রভাব
বুঝায়। সব দ্রব্যের উপর আয় পরিবর্তনের প্রভাব একরূপ হয় না। বিভিন্ন দ্রব্যের ক্ষেত্রে এ প্রভাব বিভিন্ন হয়।
আয় প্রভাব বলতে কি বুঝ (What do you mean by Income effect)
ভোক্তার আয় সবসময় স্থির থাকে না। ভোক্তার আয় পরিবর্তনশীল।
দ্রব্যমূল্য প্রদত্ত অবস্থায় আয় বাড়লে তার ক্রয়ক্ষমতা
বাড়ে। আয় বাড়লে তার অধিক তৃপ্তি পাবার সম্ভাবনা দেখা দেয়। কাজেই আয়
বাড়লে নিরপেক্ষ মানচিত্রের উপরের নিরপেক্ষ রেখায়
সে পৌঁছতে পারে। ফলে তার ভারসাম্যের পরিবর্তন ঘটে। অপরদিকে আয় কমে গেলে ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতা কমে যায় এবং
ভোক্তার নিচের নিরপেক্ষ রেখায় পৌছার সম্ভাবনা দেখা দেয়। সুতরাং, দ্রব্যমূল্য প্রদত্ত অবস্থায় আর্থিক আয়ের
পরিবর্তন হলে ভোক্তার ভারসাম্যে যে পরিবর্তন আসে অর্থাৎ দুটি দ্রব্যের বিভিন্ন সংমিশ্রণ ক্রয়ের উপর আয় পরিবর্তনের যে
প্রভাব পড়ে তাকে আয় প্রভাব বলে। আর এ আয় প্রভাবের প্রকৃতি মূলত দ্রব্যের প্রকৃতির (Nature of goods) উপর নির্ভর
করে।
উপরের চিত্রে IC1, IC2, এবং IC3 তিনটি নিরপেক্ষ রেখা। উপরের নিরপেক্ষ রেখা উচ্চতর উপযোগ নির্দেশ করে। চিত্রে
তিনটি বাজেট রেখা A1B1, A2B2, এবং A3B3 । প্রাথমিক
বাজেট রেখা A1B1, IC1 নিরপেক্ষ রেখার
সাথে E বিন্দুতে স্পর্শক। তাই E বিন্দু
প্রাথমিক ভারসাম্য বিন্দু। E বিন্দুতে X দ্রব্য OX1 পরিমাণ ক্রয় করে। এখন X ও Y দ্রব্যের দাম স্থির থেকে ভোক্তার আয় বাড়ার ফলে নতুন বাজেট
রেখা A2 B2, যা IC2 নিরপেক্ষ রেখার সাথে F বিন্দুতে ভারসাম্যে পৌঁছেছে। F বিন্দুতে X দ্রব্যের বর্ধিত ক্রয়ের
পরিমাণ X1X2 এবং Y দ্রব্যের বর্ধিত ক্রয়ের
পরিমাণ Y1Y2। আবার ভোক্তার আয় বৃদ্ধি
পেলে বাজেট রেখা হয় A3 B3, যা IC3 নিরপেক্ষ
রেখার সাথে G বিন্দুতে ভারসাম্যে পৌঁছেছে। G বিন্দুতে X দ্রব্যে বৰ্ধিত ক্রয়ের
পরিমাণ X2X3 এবং Y দ্রব্যের বর্ধিত ক্রয়ের পরিমাণ Y2Y3।
সুতরাং আমরা দেখতে পাচ্ছি যে আয়ের বৃদ্ধির ফলে দ্রব্যের
বিভিন্ন সংমিশ্রণ ক্রয়ের ক্ষেত্রে পরিবর্তন/বৃদ্ধি ঘটছে, এ পরিবর্তনকেই আয় প্রভাব বলে।
0 মন্তব্যসমূহ