শ্রেণীবিন্যাস কি এবং এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

 

শ্রেণীবিন্যাস কি এবং এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

শ্রেণীবিন্যাস কি এবং কাকে বলে

প্রাণীদের আকৃতি ও প্রকৃতিগত বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যাবলির সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন বিভাগ, শ্রেণী, বর্গ, গোত্র, গণ, প্রজাতি প্রভৃতি স্তরে বিন্যস্ত করার পদ্ধতিকে শ্রেণীবিন্যাস (classification) বলে।

শ্রেণীতত্ত্ববিদ Simpson ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে উল্লেখ করেন যে, Zoological classification is the ordering of animals into groups or sets on the basis of their relationship. অর্থাৎ পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রাণিকুলকে বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত করাই শ্রেণীবিন্যাস।

শ্রেণীবিন্যাসের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা (Necessities of classification)

শ্রেণীবিন্যাসের বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয়তা নিম্নে বর্ণিত হল।

১. প্রাণী সনাক্তকরণ (Identification of animal) : বিভিন্ন প্রাণীকে সনাক্তকরণে যেমন শ্রেণীবিন্যাসের সাহায্য নিতে হয় তেমনি নব আবিষ্কৃত কোন প্রাণীকে সনাক্তকরণের জন্য শ্রেণীবিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

২. প্রাণিজগৎ সম্পর্ক জ্ঞান আহরণ (Gathering of knowledge regarding animal kingdom) : কম সময় ও অল্প পরিশ্রমে শ্রেণীবিন্যাসের মাধ্যমে কোন প্রাণী বা প্রাণিজগৎ সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করা যায়।

৩. জাতিজনিক সম্পর্ক নির্ণয় (Determination of phylogenic relationship) : প্রাণীকুলের বিভিন্ন সদস্যদের পারস্পারিক সম্পর্ক নির্ণয় শ্রেণীবিন্যাস যেমন সহায়তা করে তেমনি শ্রেণীবিন্যাসের মাধ্যমে প্রাণীদের জাতিজনিক সম্পর্ক নির্ণয় করে প্রাণিজগতে তার অবস্থান নিরূপণ করা যায়।

৪. বিবর্তনের ইতিহাস (Evolutionary history) : শ্রেণীবিন্যাসের মাধ্যমে প্রাণিজগতের বিভিন্ন সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নিরূপণের মাধ্যমে তাদের উৎপত্তি স্থান যেমন অনুসন্ধান করা যায় তেমনি তাদের বিবর্তনের ইতিহাস উদ্ঘাটন করা যায়।

৫. উন্নত জাত উদ্ভাবন (Creation of higher yielding variety) : সংকরায়ন (hybridization) ও কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উন্নত ধরনের পশুপাখি উদ্ভাবনের জন্য শ্রেণীবিন্যাস সম্পর্কিত জ্ঞান থাকা দরকার।

৬. অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী বাছাইকরণ (Selection of economically important animal) : ক্ষতিকর ও উপকারী প্রজাতি শ্রেণীবিন্যাসের মাধ্যমে সঠিকরূপে বাছাইকরণ করা যায়।

৭. বিলুপ্ত প্রাণী সনাক্তকরণ (Identification of extinct animal) : শ্রেণীবিন্যাসের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে বিলুপ্ত প্রাণীর আবিষ্কৃত জীবাশ্মের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে তাদের পরিচয় উদ্ধার করা যায় ও প্রাণিজগতে তাদের সঠিক অবস্থান নিরূপণ করা যায়।

৮. বালাই দমন (Pest control) : শ্রেণীবিন্যাসের মাধ্যমে বালাই সৃষ্টিকারী প্রাণী যেমন সনাক্ত করা যায় তেমনি নিয়ন্ত্রণ ও দমনে শ্রেণীবিন্যাসের জ্ঞান সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

৯. বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ (Conservation of wildlife) : শ্রেণীবিন্যাসের সহায়তায় বন্যপ্রাণী সনাক্ত করা যায় এবং তাদেরকে সংরক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ