প্রোটোপ্লাজম কি (Protoplasm)
প্লাজমা পর্দাবেষ্টিত কোষের সজীব উপাদানগুলিকে সমষ্টিগতভাবে প্রোটোপ্লাজম বলে। ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে টটি সর্বপ্রথম প্রোটোপ্লাজম পর্যবেক্ষণ করেন। অতঃপর ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে Von Mhol অর্ধতরল জেলীর মত এ পদার্থের নাম করেন প্রোটোপ্লাজম।ভৌত গঠন (Physical composition)
অর্ধস্বচ্ছ প্রোটোপ্লাজম বর্ণহীন, ঘন অর্ধতরল, জেলী সদৃশ পদার্থ। প্রোটোপ্লাজমের মধ্যে কিছু দ্রব্য দ্রবণীয় অবস্থায় ও কিছু দ্রব্য কোলয়েড অবস্থায় থাকে। প্রোটোপ্লাজমের ঘন colloid অবস্থাকে Gel ও পাতলা colloid অবস্থাকে Sol বলে।
রাসায়নিক গঠন (Chemical composition)
বিভিন্ন প্রাণীর প্রোটোপ্লাজম বিশ্লেষণে প্রায় ৩৬ প্রকার মৌলের সন্ধান পাওয়া যায়। তন্মধ্যে ১২ প্রকার মৌলিক পদার্থ সব প্রাণীর প্রোটোপ্লাজম থাকে। এগুলি অক্সিজেন, কার্বন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, সালফার এবং ফসফরাস প্রোটোপ্লাজমের ৪টি মুখ্য উপাদানের মধ্যে অক্সিজেন ৬২%, কার্বন ২০%, হাইড্রোজেন ১০% ও নাইট্রোজেন ৩% থাকে। অবশিষ্ট উল্লিখিত ৮টি উপাদান প্রোটোপ্লাজমের বাকি অংশ গঠন করে। এগুলি ছাড়া প্রোটোপ্লাজম, বোরন, তামা, সিলিকা, ফ্লোরিন ইত্যাদি থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জিঙ্ক ও কোবাল্ট পাওয়া যায়। প্রোটোপ্লাজমের জৈব উপাদানের মধ্যে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, এনজাইম, হরমোন, নিউক্লিক এসিড, ভিটামিন থাকে। এছাড়া অজৈব উপাদানের মধ্যে পানি, লবণ ইত্যাদি। প্রোটোপ্লাজমের ৭৫-৯০% পানি। খনিজ উপাদানের মধ্যে ক্লোরাইড, ফসফেট, সালফার, কার্বনেট, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, লোহা ইত্যাদি। প্রোটোপ্লাজমে গ্যাসীয় উপাদান নাইট্রোজেন ও CO2 পাওয়া যায়।
বিজ্ঞানী হ্যাক্সলের মতে প্রোটোপ্লাজমকে জীবনের ভৌত ভিত্তি বলা হয়। প্রোটোপ্লাজমের যে অংশ নিউক্লিও পর্দা ও কোষ পর্দার মধ্যে অবস্থান করে তাকে সাইটোপ্লাজম (cytoplasm) বলে।
0 মন্তব্যসমূহ