খাজনা কি এবং কাকে বলে?
অর্থনীতিতে ‘খাজনা' শব্দটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আলোচিত হয়ে আসছে। খাজনা বলতে মূলধনীয় দ্রব্যসামগ্রী যেমনঃ ভূমি, কলকব্জা, যন্ত্রপাতি, বাড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করার জন্য তাদের মালিককে প্রদত্ত অর্থ। ভূমি ব্যবহার করার জন্য এর মালিককে যে অর্থ প্রদান করা হয় তাকেই খাজনা বলে। অর্থনীতিতে ভূমি বলতে শুধুমাত্র মাটিকেই বুঝানো হয় না। বরং সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদকেই ভূমি বলা হয় যার যোগান সীমাবদ্ধ। এ সীমাবদ্ধ যোগান বিশিষ্ট প্রাকৃতিক সম্পদ হতে সম্পদের মালিক যে অর্থ পায় তাকেই খাজনা বলা হয়। বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ বিভিন্নভাবে খাজনার সংজ্ঞা দিয়েছেন। যেমন,অধ্যাপক মার্শাল বলেছেন, “ভূমি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক
সম্পদের মালিকানা হতে যে আয় হয় তাকে খাজনা বলে।”
ডেভিড রিকার্ডোর মতে, “ভূমির আদি ও অবিনশ্বর ক্ষমতা
ব্যবহারের জন্য উৎপাদনের যে অংশ ভূমির মালিককে প্রদান করা হয় তাকে খাজনা বলে।”
ক্ল্যাসিকাল অর্থনীতিবিদদের মতে, ভূমি ব্যবহার মূল্যই
হল খাজনা। তাঁরা মনে করতেন শুধুমাত্র ভূমির ক্ষেত্রেই খাজনা প্রযোজ্য। অর্থাৎ, ভূমি হতে যে উদ্বৃত্ত আসে তাই খাজনা।
কিন্তু, আধুনিক অর্থনীতিবিদগণ খাজনা শব্দটিকে বিস্তৃত অর্থে ব্যবহার করেছেন। তাঁদের মতে, শুধু ভূমি নয় উৎপাদনের
যে কোন উপাদান হতে খাজনার উদ্ভব ঘটতে পারে। তবে সেসব উপকরণের যোগান সীমাবদ্ধ হতে হবে। মিসেস জোয়ান রবিনসন
এর ভাষায়, “উৎপাদনের কোন একক উপাদান কোন
নির্দিষ্ট পেশায় একটি ন্যূনতম দামে নিয়োজিত থাকে। কিন্তু যদি কখনো উক্ত উপাদানটি
ঐ ন্যূনতম দামের অতিরিক্ত কিছু আয় করে
তবে ঐ উদ্বৃত্ত আয়কে খাজনা বলা হয়।”
সুতরাং, উৎপাদনের সীমাবদ্ধ উপকরণসমূহ ব্যবহার করার
জন্য তার মালিককে যে অর্থ প্রদান করা হয় তাকেই খাজনা বলে।
0 মন্তব্যসমূহ